অনেকেই হয়ত শিরোনাম পড়ে কিছুটা ভড়কে গেছেন যে বুকের দুধ কে আবার সংরক্ষণ করে খাওয়ানো যাবে? জ্বী, ঠিক ধরেছেন, এটা সম্ভব। এখন অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কর্মজীবী মায়েদের এই পরামর্শ হরহামেশাই দিয়ে থাকেন।
আমরা প্রায় সময় কর্মজীবী মায়েদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পাই যে অফিসে থাকা অবস্থায় কীভাবে তারা তাদের বাচ্চা কে বুকের দুধ খাওয়াবে তাই তারা বাজারের কৌটো দুধ খাওয়ান। কিন্তু এর সমাধান খুব ই সহজ। আপনি চাইলে আপনার বুকের দুধ সংরক্ষন করে রাখতে পারেন আর সেটা আপান্র বাচ্চা কে খাওয়াতে পারেন।
শুধু কি কর্মজীবী মায়েরাই বুকের দুধ সংরক্ষন করে বাচ্চা কে খাওয়াতে পারেন ব্যাপার টা তা নয়, অনেক সময় বাচ্চা ঠিক মত বুকের দুধ চুষতে পারে না, অনেক সময় পাবলিক প্লেসে আপনি আপনার বাচ্চা কে বুকের দুধ খাওয়াতেও পারছেন না, আবার অনেক সময় বাচ্চা হসপিটালে থাকা অবস্থায় ও বুকের দুধ খাওয়ানো সমস্যা হয়ে যায় তাই এই সময় গুলো তে যদি বুকের দুধ সংরক্ষন করে রাখা যায় তাহলে খুব সহজেই তা বাচ্চা কে খাওয়ানো যাবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে বুকের দুধ সংরক্ষন করবেন আর কীভাবে সেটা বাচ্চা কে খাওয়াবেন? নীচের ধাপ গুলো ভালো ভাবে লক্ষ্য করুন তাহলে আপনিও খুব সহজে কাজ টি করতে পারবেনঃ
প্রথম ধাপঃ দুধ সংগ্রহ
এই পুরো প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ টি হল দুধ সংগ্রহ করা। আর এই কাজ টি আপনাকে করতে হবে খুব সাবধানে। কারন এই কাজ টির উপর নির্ভর করবে অন্যান্য কাজ গুলো। পুরো দুধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া কে কয়েকটি ধাপে ভাগ করে নিলে কাজ টি আপনার জন্য খুব ই সহজ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ কি ধরনের বোতল বা জারে দুধ সংরক্ষন করবেন
এবার প্রশ্ন চলে আসে কি ধরনের জারে সংগৃহীত দুধ সংরক্ষন করে রাখবেন? দুধ সংরক্ষনের ব্যাপার টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বলে থাকে প্লাস্টিকের কোন বোতলে এই দুধ সংরক্ষন করা যাবে। আসলে প্লাস্টিকের বোতলে ব্রেস্ট মিল্ক না রাখাই ভালো। চেষ্টা করা উচিত কোন কাচের বোতলে এই দুধ সংরক্ষন করতে। তবে যেই বোতলে এই দুধ সংরক্ষন করবেন সেটা আগে গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিবেন।একান্তই প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করতে হলে যেন ফুড গ্রেড বোতল ব্যবহার করে তা খেয়াল রাখতে হবে।
তৃতীয় ধাপঃ কোথায়, কীভাবে সংরক্ষন করবেন
দুধ সংগ্রহ করা হয়েছে, জারে রাখা হয়েছে এখন কীভাবে সংরক্ষন করব যাতে দুধের কোন সমস্যা না হয় আর বাচ্চা কে সেটা সঠিক ভাবে পান করানো যায়।
এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় সব সময় খেয়াল রাখবেনঃ ১) দুধ সংগ্রহ করেই ফ্রিজে রাখবেন ২) আর এভাবে আপনি ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত দুধ বাচ্চা কে পান করাতে পারবেন
কিছু সাধারন প্রশ্ন ব্রেস্ট মিল্ক সংরক্ষনের ক্ষেত্রে আপনার মনে জাগতে পারে
প্রশ্নঃ যখন ব্রেস্ট পাম্প করে বের করা হয় তখন পেইন হয় একটু, তখন কি করব?
উত্তরঃ আপনি যখন ব্রেস্ট পাম্প করে বের করবেন তখন আপনার প্রথমে একটু ব্যাথা করবে এটা খুব স্বাভাবিক এতে ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই। ব্যাথা উপশমের জন্য আপনি ব্রেস্ট পাম্পের আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিতে পারেন আর যখন ব্রেস্ট পাম্প করা হবে তখন জোরে জোরে শ্বাস আদান-প্রদান করবেন।
প্রশ্নঃ কত টুকু পরিমাণ ব্রেস্ট মিল্ক আমি সংরক্ষন করতে পারব?
উত্তরঃ আপনি ১২০ মিলিলিটার দুধ এক বারে সংরক্ষন করে রাখতে পারবেন।
প্রশ্নঃ ফ্রিজে সংরক্ষিত দুধের রং কি ফ্রেশ দুধের রঙের চেয়ে ভিন্ন হতে পারে?
উত্তরঃ মাঝে মাঝেই ফ্রিজে সংরক্ষিত দুধের রং ফ্রেশ দুধের চেয়ে ভিন্ন হতে পারে। এটা নিয়ে ভাববার কিছুই নেই, অনেকেই ভাবতে পারেন এতে হয়ত দুধের পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে কিন্তু না, এই রং পরিবর্তনে দুধের পুষ্টিগুণে কোন কমতি হয় না।
প্রশ্নঃ ফ্রিজ থেকে দুধ বের করে মাইক্রো- ওয়েভ এ গরম করে নিলে কি ভালো হবে?
উত্তরঃ না, এই কাজ টি করতে যাবেন না। সংরক্ষিত দুধ ফ্রিজ থেকে বের করে কিছুক্ষণ রুম তাপমাত্রায় রেখে শিশু কে পান করাবেন কিন্তু কখনো গরম করবেন না।
প্রশ্নঃ সংরক্ষিত দুধ কীভাবে শিশু কে খাওয়াব?
উত্তরঃ খুব সহজ, আপনি যে বোতলে দুধ সংরক্ষন করছেন তার সাথে একটি নিপল স্থাপন করেই আপনি সেখান থেকে বাচ্চা কে দুধ পান করাতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন দুধ যেন বেশি ঠাণ্ডা না থাকে, ফ্রিজ থেকে বের করে কিছুক্ষণ রুমে রেখে তারপর পান করাবেন।
আপনজন স্বাস্থ্য সেবা আপনার পাশে রয়েছে শুধু মাত্র আপনার একটি ফোন কলের জন্য। ১৬২২৭ এই নাম্বারে ফোন করে আপনি সরাসরি একজন ডক্টরের সাথে কথা বলতে পারবেন। গর্ভবতী মা এবং সদ্য মা দের জন্য আপনজন স্বাস্থ্য সেবা আপনার পাশেই রয়েছে। এছাড়া “আপনজন সগর্ভা” মোবাইল অ্যাপ টি ডাউনলোড করে আপনি নিয়মিত বিভিন্ন টিপস পেতে পারেন।
আপনজন এ প্রকাশিত সকল লিখা বিজ্ঞান সম্মত বিভিন্ন ওয়েব পোর্টাল বা জার্নাল থেকে সংগ্রহীত। আমাদের কোন কনটেন্ট বা লিখা সরাসরি কাউ কে চিকিৎসা দেয়ার জন্য নয় বরং সচেতনতা সৃষ্টি করাই আমাদের মুল উদ্দেশ্য। গর্ভকালীন যে কোন চিকিৎসা বা সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চার দেখা পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য কোন প্রশ্ন বা কিছু জানার থাকলে কল করুন ১৬২২৭ এই নাম্বারে।