Sign Up

OR

Sign In

যে পাঁচটি বিষয় মা’কে শিশুর জন্মের পর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করে

গর্ভকালীন সময়ে দাঁতের যত্নে করণীয়

যে ৫ টি কারণে শিশুর প্রথম বছরে গরুর দুধ খাওয়াবেন না
আপনার সোনামণিকে এখনই গরুর দুধ খাওয়াবেন কিনা ভাবছেন? জেনে নিন কেন অপেক্ষা করবেন তার বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত...

শিরোনাম দেখেই হয়তো কি একটু অবাক হলেন যে গরুর দুধ কেন আপনার সোনামণিকে খাওয়াবেন না? হয়তো ভাবছেন “গরুর দুধে তো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ছয়মাস বয়স থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য শক্ত খাবার তাকে যখন দিচ্ছিই, তাহলে গরুর দুধ খাওয়াব না কেন?” আসলে আপনার সোনামণির পরিপাকতন্ত্র গরুর দুধ হজমের জন্য প্রস্তুত হতে কিছুটা সময় লাগে। তাছাড়া এসময়ে তার ঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও এতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে না। এটা মনে রাখতে হবে যে প্রথম ছয় মাস আপনার সোনামণির জন্য শুধুমাত্র বুকের দুধই যথেষ্ট। এ সময়ে ওর জন্যে আর কোনও খাবার বা পানীয়ের প্রয়োজন নেই, এমনকি একফোঁটা পানিও না। ছয়মাস বয়সের পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার তাকে দিতে হবে। তবে এই বাড়তি খাবার হিসেবে গরুর দুধ তাকে দিতে হলে আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস-এর মতে তার বয়স এক বছর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিৎ। কেন তার আগে তাকে গরুর দুধ খাওয়ানো ঠিক হবে না, চলুন জেনে নিই তার কারণগুলো।

১। গরুর দুধে ভিটামিন সি, জিঙ্ক ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ যথাযথ পরিমাণে থাকে না। তাছাড়া এতে মায়ের দুধের তুলনায় আয়রনের পরিমাণ একই হলেও তা সহজে শোষণযোগ্য অবস্থায় থাকে না। এর ফলে শিশুর রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।

২। তাছাড়া এ বয়সে তার চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত চর্বি বা ফ্যাটও এতে থাকে না। ফলে এ সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের অভাবে তার সঠিকভাবে বেড়ে ওঠাও বাধাগ্রস্থ হতে পারে। .

৩। গরুর দুধে কিছু পুষ্টিগুণের অভাব থাকলেও প্রোটিন বা আমিষ থাকে খুবই বেশি পরিমাণে। আর সেটা তার জন্য হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষতঃ এতে সাথে ক্যাসিন-এর পরিমাণ মায়ের দুধের তুলনায় ছয় থেকে সাত গুণ পর্যন্ত বেশি থাকতে পারে। এই অতিরিক্ত ক্যাসিনের উপস্থিতির কারণে গরুর দুধ তার সহজে হজম হয়না। ফলে পেটফাঁপা বা বদহজমের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া গরুর দুধের প্রোটিন তার জন্য আরও কিছু সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন অ্যালার্জির সমস্যা কিংবা কোনও কোনও ক্ষেত্রে পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

৪। অনেক গবেষণায় আবার এও দেখা গেছে যে খুব অল্প বয়স থেকে শিশুকে গরুর দুধ দিলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় – বিশেষতঃ যদি পরিবারের অন্য কারও যদি ডায়াবেটিস থাকে। তাছাড়া গরুর দুধে প্রোটিন ও সোডিয়ামের অতিরিক্ত মাত্রা তার কিডনীর ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৫। আরেকটা কথা, বুকের দুধে এমন কিছু উপাদান থাকে যা আপনার সোনামণিকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করে – যেমন আইজিএ (এক ধরণের অ্যান্টিবডি) এবং লাইসোজাইম তাকে পেটের ইনফেকশন হওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। গরুর দুধে এ উপাদানগুলি থাকে না। এ বয়সে যথেষ্ট পরিমাণ বুকের দুধ না পেলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে আর নানা রকম অসুখ বিসুখ হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

তবে এক বছর বয়স থেকে গরুর দুধ হজম করতে তার অসুবিধা হবার কথা নয় এবং তখন তার শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তাই এরপর থেকে গরুর দুধ তাকে দিতে কোনও বাধা নেই। এটি কিন্তু ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস যা কিনা তার হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করবে।

 আপনজন ব্লগে প্রকাশিত সকল লিখা আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করে তোলার জন্য। এখানে দেয়া টিপস গুলোই সকল সমস্যার সমাধান না তবে এই লিখা গুলো পরে আপনাদের সচেতন হতে হবে কিন্তু যে কোন পদক্ষেপ নেয়ার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিতে হবে।  

আপনজন কল সেন্টারে আপনার যে কোন সহায়তার জন্য রয়েছেন অভিজ্ঞ ডক্টর। ১৬২২৭ নাম্বারে ফোন করেই কথা বলে নিতে পারেন ডক্টরের সাথে আর আপনার সমস্যার সমাধান নিতে পারেন খুব সহজে। এছাড়া আপনজন সেবা আপনাকে দিতে পারে অনেক সমস্যার সমাধান। আপনজন সেবা নিতে কল করুন ১৬২২৭ এই নাম্বারে। 

 

তথ্যসূত্র :

  • Alexander KC L, & Reginald S, (2003). Whole cow’s milk in infancy. Paediatric Child Health. 8(7): 419–421.
  • Ziegler E, (2007). Adverse effects of cow's milk in infants. Nestle Nutritional Workshop Ser Pediatric Program. 60:185-96; discussion 196-9.